সতর্ক থাকুন ক্রেডিট কার্ড ব্যাবহারে

ইন্টারনেটের কল্যাণে জীবন খুব সহজ হয়ে উঠেছে আজকাল। ঘরের টুকিটাকি থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বড় বড় কেনাকাটা সবই করা যাচ্ছে অনলাইনে। কেনাকাটায় আর আগের মতো কাগুজে নোটেরও দরকার পরছে না। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনেই মেটাতে পারছেন পণ্যের দাম। আবার হোটেলের বিল পরিশোধ, শিপ

তবে জীবনকে সহজ করলেও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে গিয়ে অনেক সময় বিপদে পড়তে হয়। কেনাকাটার বিভিন্ন সাইট হ্যাকিং,ক্রেডিট কার্ডের নম্বর হ্যাক করে ব্যবহারকারীর অজান্তে টাকা তোলাসহ নানা অপরাধ বাড়ছে।

ক্রেডিট কার্ডের কেনাকাটার এই অনাকাঙ্খিত হয়রানি এড়াতে কিছু মেনে চলা ভাল-

১. আজকাল মাঝেমধ্যেই ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করার কথা শোনা যায়। আপনার কার্ডটিও যে ক্লোন হয়ে যাবে না তার নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু কার্ড ক্লোন হলেও সে কার্ড ব্যবহারের জন্য পিন নাম্বার দরকার। তাই আপনার পিন নাম্বারটি যদি নিরাপদ রাখতে পারেন তাহলে অর্থ খোয়া যাওয়ার তেমন আশংকা থাকবে না।

২.ভুলেও কোনো ওয়েবসাইটে, ফেসবুকে বা ই-মেইলে ক্রেডিট কার্ডের নম্বর সংরক্ষণ করবেন না। এতে ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ সেগুলোতে রাখা ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড বা নম্বর হ্যাক হতে পারে।

৩.বিভিন্ন অনলাইনে কেনাকাটা করা যায়। ভেবেচিন্তে অনলাইনে কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেবলমাত্র ছাড়,পোশাকের নকশা বা দ্রুত সরবরাহ করার ব্যবস্থা দেখে আকৃষ্ট হওয়া যাবে না। ভাবতে হবে,কেনাকাটার অনলাইনটি নিরাপদ কি-না। এ ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের ইউআরএল বা ঠিকানা যাচাই করে নিতে হবে। দেখতে হবে,এটির শুরু এইচটিটিপি দিয়ে কি না।

৪.কোনো প্রতিষ্ঠান কেনাকাটা করার জন্য বিশেষ লিংক পাঠালে এতে প্রভাবিত না হওয়াই ভালো। কারণ এসব প্রতিষ্ঠান বা অনলাইন প্রায়ই জাল হয়ে থাকে। সুপ্রতিষ্ঠিত কোনো ওয়েবসাইটের নাম,নকশা নিয়ে এরা নকল ওয়েবসাইট বানায়। তাই কেনাকাটা করতে অনলাইনে ঢোকার আগে নিজেই এড্রেসবারে ওয়েবসাইটের ঠিকানা লেখা ভালো। এতে ঝুঁকি এড়ানো যায়।

৫.জনবহুল জায়গা,যেমন সাইবার ক্যাফেতে বা ওয়াইফাই আছে—এমন এলাকায় অনলাইনে কেনাকাটা না করাই ভালো। কারণ আপনার পরে কম্পিউটারটি কে ব্যবহার করবে,এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। এসব জায়গায় ক্রেডিট কার্ডের নম্বরটি হ্যাক হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে।

৬.হ্যাকিং এড়াতে মোবাইল,ল্যাপটপ বা কমপিউটারে অনলাইনে কেনাকাটার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

৭.অনলাইনে কেনাকাটার জন্য কখনই পিন নম্বর দেওয়া যাবে না। কারণ অনলাইন কেনাকাটায় সিভিভি নম্বর এবং লেনদেন বিষয়ক পিন নাম্বার লাগে। এটি ফোনেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

৮.যেসব সাইট পিন নম্বর চায়,তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

৯. দোকান, হোটেল ইত্যাদিতে পিওএস মেশিন ব্যবহার করে বিল পরিশোধ করতে হলে অবশ্যই নিজের হাতে পিন নাম্বার দেবেন। আর এমনভাবে দেবেন যেন অন্যকেউ তা দেখে মুখস্ত করে রাখতে না পারে। কখনোই দোকান বা হোটেলের কর্মীকে পিন নাম্বারটি দিয়ে বিল করে নিতে বলবেন না।

১০. অনেক এটিএম মেশিনে এন্টি স্কিমার বসানো থাকে। এসব এটিএম মেশিন ব্যবহার করা তুলনামূলক নিরাপদ। তাই কোনো বুথে ঢুকলে আগেই এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে নিতে হবে।

১১. এমন প্রতিষ্ঠানের কার্ড ব্যবহার করতে হবে যারা নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়ে থাকে। যাদের কাস্টমার কেয়ারে সহজেই যোগাযোগ করা যায়।

১২. বর্তমানে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রেই কেনাকাটা কিংবা অন্য কোনো বিল পরিশোধ করা হলে অথবা এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করা হলে গ্রাহকের ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। কোনো সন্দেহজনক লেনদেন চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে জানিয়ে দিতে হবে।