২০২২-২৩ অর্থবছরে যে হারে দিতে হবে আয়কর

বাজেটে কোনো সুখবর নেই নিম্ন আয়ের করদাতাদের। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে কমছে ক্রয় ক্ষমতা। তবু বাড়ানো হচ্ছে না করমুক্ত আয়ের সীমা। ফলে বার্ষিক আয় ৩ লাখ টাকা পার হলেই দিতে হবে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ন্যুনতম আয়কর সীমা অপরিবর্তিত রাখার কথা বলা হয়েছে।

দেশের ব্যবসায়ী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্য উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সাধারণ করদাতাদের একটু স্বস্তি দিতে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থমন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি।

সর্বশেষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা করা হয়েছিল।

করমুক্ত আয়-সীমার পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরে করের হারেও কোনো পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়নি ঘোষিত বাজেটে। ফলে চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও নিচে উল্লেখ করা হারে কর দিতে হবে-

প্রথম ৩,০০,০০০/-  টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর শূন্য
পরবর্তী ১,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ৫%
পরবর্তী ৩,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১০%
পরবর্তী ৪,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১৫%
পরবর্তী ৫,০০,০০০/-টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০%
অবশিষ্ট টাকার আয়ের উপর ২৫%

ব্যক্তি শ্রেণীর মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছর বা তদুর্ধ বয়সের পুরুষ করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বহাল থাকছে।

প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য কোনো কর দিে হবে না।

গেজেটভূক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়ের সীমা  ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বহাল থাকছে।

করমুক্ত সীমার ঊর্ধ্বের আয়ের ক্ষেত্রে প্রদেয় ন্যূনতম আয়করের পরিমাণ এলাকাভেদে নিম্ন রূপভাবে বিন্যস্ত করা আছে চলতি অর্থবছরের বাজেটে।

এলাকার বিবরণ ন্যূনতম করের পরিমাণ
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা ৫ হাজার টাকা
অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা ৪ হাজার টাকা
সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতা ৩ হাজার টাকা

ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের করের হার বিষয় অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে বলেন, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ছিল মাত্র ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা, যা ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। পরবর্তী অর্থবছরেও উক্ত সীমা বহাল রাখা হয়েছে। নারী করদাতা, সিনিয়র করদাতা, প্রতিবন্ধী করদাতা, তৃতীয় লিঙ্গ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়ের এই সীমা আরও বেশি।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে দেশে একটি শক্তিশালী কর সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে করদাতা, ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব কর নীতি অনুসরণ করে চলেছে। এ নীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে ক্রমান্বয়ে করের বোঝা কমিয়ে অর্থনীতিতে বিনিয়োগের পরিমাণ এবং কর জিডিপির অনুপাত বাড়ানো ও করদাতাদের মাঝে কর প্রতিপালনের আগ্রহ বৃদ্ধি করা।