নিজের বাসা কেনাতে সতর্ক থাকুন  

মানুষের সারাজীবনের ইচ্ছা থাকে নিজের একটা বাড়ি হবে । কিন্তু বাড়ি করাটা বর্তমানের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। জমি কেনা বাড়ি করা এটা প্রচুর সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয় বহুলও বটে। তাই ফ্ল্যাট কেনার দিকে মানুষ এখন ঝুঁকছে। আপনিও যদি সেই দলে নাম লিখাতে চান তাহলে আপনাকে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। তাতে ভবিষ্যতের ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবেন তাহলে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে সবার আগে দেখতে হবে,যেই প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট কিনতে চাচ্ছেন সেই প্রতিষ্ঠানের বৈধতা আছে কিনা। প্রতিষ্ঠানটি রিহ্যাবের সদস্য কি না সেটিও বিবেচনায় নিতে পারেন। পাশাপাশি খোঁজ নিন প্রতিষ্ঠানটির ফ্ল্যাট হস্তান্তরের অতীত ইতিহাস।

এরপর যেটি দেখতে হবে, তা হলো যে প্রকল্পে বা ভবনে আপনি ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবছেন, সেই প্রকল্প যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত কি না। রাজধানীতে ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে সবার আগে দেখবেন, ভবনটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক অনুমোদিত কি না। জমির দলিল ঠিক আছে কি না। জমির মালিকানা এবং জমির দখলদার সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। ভূমি অফিসে গিয়ে জমির তল্লাশি দিয়ে জমির মালিকানা ও দখলদার সম্পর্কে পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। অর্থাৎ যে জমির ওপর আপনার ফ্ল্যাটটি থাকবে, ওই স্থানের জমির দলিলপত্র যাচাই করে নেওয়া ভালো। ওপরের বিষয়গুলোতে সন্তুষ্ট হওয়ার পর দেখতে হবে, যে ফ্ল্যাটটি কিনছেন, সেটির আয়তন ঠিক আছে কি না।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ফ্ল্যাট কিনে সময়মতো তা বুঝে পান না ক্রেতারা। বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এমন অভিজ্ঞতা অনেক ক্রেতার রয়েছে, যাঁরা ফ্ল্যাট কিনে ১০–১২ বছর পরও তা বুঝে পাননি। কোম্পানির পেছনে ঘুরতে ঘুরতে দিন যাচ্ছে অনেক ক্রেতার। তাই সময়মতো ফ্ল্যাট বুঝে পাওয়া খুব জরুরি। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট কিনে অনেকের টাকা আটকে গেছে।

বর্তমানে ফ্ল্যাট বা প্লট কিনতে দেশের অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিয়ে থাকে। এ ঋণের বিপরীতে ফ্ল্যাট বা প্লটটি বন্ধক রাখতে হয়। ঋণের বিষয়টি যখন আসবে তখন এ বিষয়ে পরিকল্পনা করুন আগে। কত টাকা আপনি বিনিয়োগ করবেন, প্রথমে তার একটি হিসাব করে ফেলুন। তারপর সেই সামর্থ্যের সঙ্গে মিলিয়ে পছন্দের এলাকায় পছন্দের ফ্ল্যাট-প্লট খুঁজুন। যদি আপনার সংগতির সঙ্গে দরদামে না মেলে,তাহলে ফ্ল্যাট বা প্লটের আয়তনের কিছুটা ছাড় দিতে হবে আপনাকে।

ফ্ল্যাট বা প্লট কিনতে হলে ক্রেতার অবশ্যই কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকতে হবে। কারণ, টিআইএন ছাড়া ফ্ল্যাট-জমি নিবন্ধন করা যাবে না। ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে আরেকটি জরুরি বিষয় হচ্ছে, কী ধরনের ভবনে কিনছেন সেটি। যদি আপনি নির্মাণাধীন ভবনে ফ্ল্যাট কেনেন, তাহলে আপনার জন্য সুবিধা বেশি। কারণ, যত দ্রুত আপনি নিজের বাসা বা ফ্ল্যাটে উঠতে পারবেন, তাতে বাসাভাড়া বাবদ খরচ কমবে। সে ক্ষেত্রে ভাড়ার টাকায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন। রাজধানী ঢাকা শহরে কমবেশি ৫০ লাখ থেকে শুরু করে ২০ কোটি টাকার ফ্ল্যাট আছে।

 

অর্থসূচক / এইচএআই