সঞ্চয় করবেন যেভাবে

জীবনে ভাল সময়, খারাপ সময় চক্রাকারে আসতে পারে। খারাপ সময়ে বন্ধু-স্বজনদের অনেককেই পাশে পাওয়া যায় না। ওই সময়ে সঞ্চয় আপনার পরম বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। যোগাতে পারে খারাপ সময়টুকু পার করে দেওয়ার রসদ। তাই সময় থাকতে অল্প করে হলেও সঞ্চয় শুরু করা উচিত।

অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন, সঞ্চয় কীভাবে করবো? যা আয় হয়, তার সবই তো ব্যয় হয়ে যায়। কথা অনেকটাই সত্য। এই দুর্মূল্যের বাজারে সঞ্চয় করা সহজ নয়। তবে কিছু বিষয়ে মনোযোগ দিলে সেটি আর অসম্ভবও থাকে না। আসুন দেখে নিই, কীভাবে সঞ্চয় করতে পারি-

বদলাতে হবে চিন্তাধারা: টাকা জমানোর জন্য প্রথমে একটা আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। নির্ধারণ করতে হবে মাসে কতটুকু সঞ্চয় করবেন। আর হাতে টাকা আসার পর সেই পরিমাণ অর্থ আলাদা করে রেখে দিতে হবে। এরপর যতটুকু অবশিষ্ট থাকবে সেটা দিয়ে মাসের খরচ চালানো চেষ্টা করতে হবে। এতে একসঙ্গে দুই কাজ হবে, মাসের শুরুতেই সঞ্চয় যেমন হবে তেমনি খরচের লাগাম টানার অভ্যাসও হয়ে যাবে। অনেকেই সকল খরচের পর যা অবশিষ্ট থাকে সেটা সঞ্চয় করার পরিকল্পনা করেন, যা ভুল পদ্ধতি।

বাজেট প্রস্তুতের অ্যাপঃ সবার কাছেই এখন স্মার্টফোন আছে। সেখানে একটি বাজেট ট্র্যাকিং অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন। কত আসছে, কত যাচ্ছে, কোনটে বেহিসেবী যাচ্ছে তার সবই বের করে দেবে অ্যাপ। পরিমিত ব্যয়ের অভ্যাস গড়ে দেবে এই অ্যাপ। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনী খরচের খাতও চোখের সামনে ভেসে উঠবে। এতে করে আপনি সহজেই প্রতিদিন কিছু পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে পারবেন।

অগ্রাধিকার ভিত্তিক খরচঃ ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী সঞ্চয় করা উচিত। সেই সঙ্গে কোন খরচটা বেশি জরুরি সেটা চিহ্নিত করা জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি সঞ্চয় করতে পারেন। যেমন বাড়ি কেনার জন্য চাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। তবে আগামী বছর একটি গাড়ি কিনতে চাইলে স্বল্পমেয়াদি সঞ্চয় পরিকল্পনা করতে পারেন।

অপচয় রোধ করাঃ অর্থের ধর্ম অনেকটাই তরলের মতো, হাত থেকে সহজেই বেরিয়ে যায়। আর নিজের অজান্তেই আমরা অপচয় করে ফেলি। তাই হাতে টাকা আসার পর প্রথম কাজটি হওয়া উচিত কোথায় অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো হয় সেটা চিহ্নিত করা।হতে পারে বিলাশবহুল স্থানে বেড়াতে যাওয়া, অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা ইত্যাদি। কোথায় আপনার অর্থ অপচয় হচ্ছে সেটা চিহ্নিত করতে পারলে তা বন্ধ করার উপায় বের করা সহজ হবে। মনে রাখতে হবে, অর্থ অপচয় না করলেই তা সঞ্চয় হবে।

ধারাবাহিকতা রক্ষা করাঃ অর্থ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ এবং ধরে রাখার স্পৃহাই মুখ্য বিষয়। বড় অংকের টাকা জমানোর জন্য নিজের উপর বাড়তি চাপ নেওয়ার কোনো কারণ নেই।

বিনিয়োগঃ শুধু টাকা জমানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। জমানো অর্থ থেকে ভালো কিছু পেতে চাইলে তা বিনিয়োগের চেষ্টা করতে হবে। বাজারে এমন অসংখ্য সুযোগ আছে। তবে যাচাই বাছাই করে জেনেশুনে বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ বিনিয়োগের অসংখ্য সুযোগের মাঝে সর্বহারা হওয়া ফাঁদও কিন্তু কম নয়।তথ্যসূত্র:অনলাইন